নারায়ণগঞ্জের আদমজীতে অস্ত্র প্রদর্শন করা যুবক
সোহাগকে সাতদিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি
পুলিশ, ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংঙ্ক
Tnntv24.নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের ওয়েস্টেজ কাপড় (ঝুট) ব্যবসা নিয়ন্ত্রন নিয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংর্ষের
সময় অস্ত্র প্রদর্শন করা যুবক সোহাগকে সাতদিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃংখলা বাহিনী। এ নিয়ে আদমজী ইপিজেডের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের
মধ্যে আতংঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারও দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংর্ঘষের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সংর্ঘষের ঘটনাস্থল বা অস্ত্র প্রর্দশন করা জায়াগা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কাম্পাউন্ড , আদমজী র্যাব ১১ হেডকোয়াটার, শিল্প পুলিশ ইউনিট চার অফিসের
দুরত্ব মাত্র ৫ থেকে ৭শ গজ। আইনশৃংখলা বাহিনীর এতোগুলো প্রতিষ্ঠানের সামনে এ ভাবে অস্ত্রপ্রদর্শন করা এবং তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে না পারার
কারনে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পুুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৬ মার্চ বিকেলে নারায়ণগঞ্জে আদমজী মুনলাইট সিনেমা হলের সামনে বিএনপি নেতা মনির হোসেন, যুবদল নেতা রুহুল
আমিন গ্রæপের সাথে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘষ হয়। এতে ১০ টি মটোরসাইকেল
আগুনে পুড়িয়ে দেয় হয়। আহত হয় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন। দুই গ্রুপেরে সংর্ঘষ চলাকালিন সময়ে অস্ত্র তাক করে এক যুবকের গুলি ছোড়ার
ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ,ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচার হয়। ওই যুবকে গ্রেফতার করতে হন্য হয়ে মাঠে নামে
আইনশৃংখলা বাহিনী। কিন্তু গত সাত দিনেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, অস্ত্র প্রদর্শন করা ওই যুবকের নাম সোহাগ। তিনি
আদমজী কদমতলী কাসেমপাড়া এলাকার রমজান আলীর ছেলে বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনুর আলম। ওসি জানান, সংর্ঘষের ঘটনায় কোন পক্ষই
থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেনি। পুলিশ অস্ত্র প্রদর্শন করা যুবকের নাম ঠিকানা খুঁজে বের করে তাকে গ্রেফতারের জন্য কাজ করছে। কিন্তু সংর্ঘষের
পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ জাতীয় ও স্থানীয় গনমাধ্যমে তার ছবি প্রকাশিত হওয়ায় সে গা ঢাকা দিয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ
রয়েছে। পুলিশ চেষ্টা করছে তাকে গ্রেফতারের জন্য।
যদিও নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর দুই দিন পর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, অস্ত্রধারী যুবক
সোহাগকে তিনি চেনন না। সোহাগ সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপির বা অঙ্গসংগঠনের কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয়। তৃতীয় কোন পক্ষ সোহাগকে অস্ত্র দিয়ে
মাঠে নামিয়েছে পরিস্থিতি ঘোলা করতে। তিনি অস্ত্রধারী যুবক সোহাগের গ্রেফতারের দাবি জানান। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে বলেন, সোহাগ তার
কোন আত্মীয় নয়। প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশ নিট ওয়্যার এন্ড ম্যানফ্যাকচারাস এন্ড এক্সপোটার এসোসিয়েশন (বিকেএমইএর) নিবার্হী সভাপতি ফজলে এহসান শামীম জানান, গার্মেন্টেসের ঝুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রন বা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আদমজী ইপিজেডহ নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করছে। অনেক জায়গায় সন্ত্রাসীরা গোলোগুলিতে লিপ্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় সাধারণ ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কারন সরকারি আদেশে ব্যবসায়ীদের
লাইসেন্সকৃত অস্ত্র থানায় জমা দিয়ে দিয়েছে। নানা কারনে পুলিশ তৎপরতা অনেক কমে গেছে। তাই অবিলম্বে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রপ্রদর্শনকারি
সন্ত্রাসীদের চিহৃত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ র্যাব ১১ (সিও ) লে. কর্ণেল এ এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, অস্ত্রধারী সোহাগকে গ্রেফতার করতে র্যাবে গোয়েন্দা টিম কাজ করছে।
আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অস্ত্রধারী যুবকে আইনের আওতায় আনা হবে।