নারায়ণগঞ্জ শুক্রবার | ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  সর্বশেষ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রূপগঞ্জে জামায়াতের গণসংযোগ,লিফলেট বিতরণ:Nafiz Ashraf.Tnntv24
জানেন, আমরা মেয়েরা বাবার অপদস্থ হওয়ার ভিডিও দেখে রাতে ঘুমাতে পারছি না।Nafiz Ashraf.Tnntv24
বিএনপির জরুরি বৈঠকে তারেক রহমান সভাপতি।Nafiz Ashraf.Tnntv24
বিষ্ফোরক মামলায় হিরার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন, শুনানি ২০এপ্রিল।Nafiz Ashraf.Tnntv24
দেশ গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় বিএনপি-নজরুল ইসলাম।Nafiz Ashraf.Tnntv24
হাজার হাজর পিঁপড়রা পাচার;কেনিয়ার বিমানবন্দরে চার চোরাকারবারি আটক:Nafiz Ashraf.Tnntv24
রূপগঞ্জে এসআইকে টেক্সটাইল মিলে ডাকাতি: Nafiz Ashraf.Tnntv24
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জে ২১ শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা।Nafiz AShraf.Tnntv24
শ্রমিক নেতা সেলিম মাহমুদকে যৌথবাহিনী গ্রেফতার করেছে।Nafiz Ashraf.Tnntv24
মানুষ আজ তোমাকে ঘৃণা করে,শামীম ওসমান তুমি কাপুরুষ।Nafiz Ashraf.Tnntv24
Next
Prev

জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষ,বিতর্কিত পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলেরএসিল্যান্ডের বদলি।Nafiz Ashraf.Tnntv24

জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষ,বিতর্কিত পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলেরএসিল্যান্ডের বদলি।Nafiz Ashraf.Tnntv24

Facebook
WhatsApp
LinkedIn
জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষ,বিতর্কিত পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলেরএসিল্যান্ডের বদলি।Nafiz Ashraf.Tnntv24

জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষ নির্ধারণ করে দিয়ে বিতর্কিত

অবশেষে রূপগঞ্জের পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের সেই এসিল্যান্ডের বদলি

Tnntv24.স্টাফ রিপোর্টার রূপগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষ নির্ধারিত করে দেওয়া সেই বিতর্কিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) উবায়দুর রহমান সাহেলকে গত ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার বদলি করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে তাকে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে বদলি করা হয়। স্বেচ্ছাচারি এসিল্যান্ড উবায়দুর রহমান সাহেলের বদলির খবরে এলাকার জমির মালিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তার অন্যত্র বদলি হওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে  সাধারণ জমির মালিকরা। সদ্য যোগদান করা এসিল্যান্ড মোঃ তাছবীর হোসেনের কাছে জমি মালিকদের প্রত্যাশা, তিনি ঘুষমুক্ত নামজারিসহ অন্যান্য কার্যক্রম দ্রুত পরিচালনা করবেন।
নামজারি বা নাম খারিজ করতে সরকার নির্ধারিত খরচ কোর্ট ফি ২০টাকা, নোটিশজারি ৫০টাকা, খতিয়ান ফি ১০০টাকা, রেকর্ড সংশোধন ফি ১হাজার টাকা সর্বমোট ১ হাজার ১৭০ টাকা। এক্ষেত্রে এসিল্যান্ড উবায়দুর রহমান সাহেল জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষের টাকা নির্ধারণ করে দেন। সে অনুযায়ী নামজারির ক্ষেত্রে অর্পিত সম্পত্তি ‘ক’ তালিকায় প্রকাশিত জমি, ‘খ’ তালিকায় প্রকাশিত জমি ও নরমাল জমির নামজারি করা হয়। জমির ধরণ হিসেবে ‘ক’ তালিকায় প্রকাশিত ১শতাংশ জমির নামজারি ৫হাজার টাকা, ‘খ’ তালিকায় প্রকাশিত ১শতাংশ জমির নামজারি ৩হাজার টাকা ও নরমাল ১শতাংশ থেকে ১০শতাংশ জমির নামজারি ১০হাজার টাকা থেকে ২০হাজার টাকা  ঘুষ নির্ধারণ করে দিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উবায়দুর রহমান সাহেল বিতর্কিত হয়ে উঠে। এছাড়া রাজউকের পূর্বাচল উপশহরের ৩কাঠা প্লটের জমির নামজারি ২০হাজার টাকা, ৫কাঠা প্লটের জমির নামজারি ৩০হাজার টাকা, সাড়ে ৭কাঠা প্লটের জমির নামজারি ৪০হাজার টাকা ও ১০কাঠা প্লটের জমির নামজারি ৭৫হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেন। জমির কাগজপত্রের গড়মিল অনুযায়ী টাকার পরিমাণ আরো বেশি আদায় করা হয়। আদায়কৃত টাকার ২৫ভাগ ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ২৫ভাগ সার্ভেয়ার ও কানুনগো, ৫০ভাগ সহকারী কমিশনার ভূমি উবায়দুর রহমান সাহেল ভাগ ভাটোয়ারা করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সুযোগ পেয়ে ইউনিয়ন তহসিলদাররা ঘুষবাণিজ্যে মেতে উঠে।
গত ২০২৪ সালের ১৪জুলাই এককালের ছাত্রলীগ নেতা উবায়দুর রহমান সাহেল রূপগঞ্জের পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি উপজেলা ভূমি অফিসকে অনিয়ম, ঘুষবাণিজ্য আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন। এরপর উপজেলা ভূমি অফিসের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। তার বিরুদ্ধে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা, জাল দলিলে জমি নামজারি (খারিজ) করা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সেবাপ্রত্যাশীদের হয়রানি করাসহ নানা অভিযোগ উঠে।
জানা গেছে, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ততবিরে উবাদুর রহমান সাহেল পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলে সহকারী কমিশনার(ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন। রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভা, দাউদপুর, ভোলাবো, রূপগঞ্জ ও কাতেয়পাড়া ইউনিয়ন নিয়ে পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেল গঠিত হয়। রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বাঘবের কেয়ারিয়া এলাকায় গোলাম দস্তগীর গাজী আবাসন প্রকল্প জি পার্ক গড়ে তোলা হয়। কাঞ্চন পৌরসভা, কাতেয়পাড়া, ভোলাবো ও দাউদপুর ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠে। এখানে দায়িত্বে নিয়োজিত করেন উবায়দুর রহমান সাহেলকে। আবাসন প্রকল্পের পাশাপাশি সাধারণ জমির মালিকদের কাছ থেকে নামজারি করতে নেওয়া হতো বিপুল পরিমাণ টাকা। একজনের জমি অন্যজনের নামে নামজারি করা হয়। আবার মিসকেস করে অর্থের বিনিময়ে জমির সঠিক মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হতো। এসব টাকা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আনুপাতিক হারে ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে আসছে।
গত এক বছরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উবায়দুর রহমান সাহেল পূর্বাচল উপশহরের ৩নম্বর সেক্টরের গুতিয়াবো এলাকায় প্লট ও আশপাশের এলাকায় জমি ক্রয় করেছেন। হয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক। ছাত্রলীগ করা উবায়দুর রহমান সাহেল জমির খারিজ করতে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের টাকা। আবাসন প্রকল্পের যোগসাজসে জমি না কিনে জোর পূর্বক বালু ভরাট, খাড়া দলিল, ভূয়া দলিলে নামজারি করা হয়। এসকল আবাসন প্রকল্প গুলোর হাত থেকে রেহাই পেতে নামজারি ও মিসকেস মামলা দায়ের করেন জমি মালিকরা। আর এ অফিসে নামজারি করা মানে অসীম ভোগান্তি মাথা নেয়া। এসিল্যান্ড আবাসন প্রকল্পের মালিকদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে আতাঁত করেই নামজারি করতে দেরি করেন। উবায়দুর রহমান সাহেলের কাছে অসহায় হয়ে পড়ে জমির মালিকরা।
ভূমিহীনদের মাঝে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত, খতিয়ানের ভুল সংশোধন, নামজারি ও জমাভাগ, ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণীর আপত্তি-নিষ্পত্তি, দেওয়ানি আদালতের রায় বা আদেশমূলে রেকর্ড সংশোধন, ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন নিষ্পত্তি, জমা একত্রকরণ ও বিবিধ কেসের আদেশের নকল বা সার্টিফায়েড কপি প্রদান কোনটিরই টাকা ছাড়া কাজ হয় না।
সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে দালালেরা যে টাকা নেন, তা ভাগ-বাঁটোয়ারাও হয় নানা ধাপে। ভূমি অফিসে নামজারি, জমাভাগ, খাজনা আদায়, জমির পর্চা (খসড়া) তোলা সহ সকল কাজে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনৈতিকভাবে বাড়তি টাকা নেয়া হয়। চুক্তির টাকা ছাড়া কোনো ফাইলই নড়ে না। তার দুর্নীতির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ভূমি মালিকেরা। ঘুষখোর এই ভূমি কর্মকর্তা তার ইচ্ছামত দুর্নীতি করে চলেছেন।
পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার উবায়দুর রহমান সাহেল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বদলি হয়ে গেছি। ব্যস্ততা দেখিয়ে এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।
এ ব্যাপারে সদ্য যোগদানকারী পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার মোঃ তাছবীর হোসেন বলেন, জমি নামজারির ডিজিটাল সেবা ই-নামজারি সার্ভারটি ঠিক থাকলে সাধারণ মানুষ ভোগান্তি, হয়রানি ও ঘুষ ছাড়াই সঠিক সময়ে নাজমারি পেয়ে যাবে।

এ সম্পর্কিত আরো খবর...

error: Content is protected !!