জাকির খাঁন মুক্ত হলে শহরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কি
পরিবর্তন হবে,এমন প্রশ্ন অনেকের
Tnntv24.নিজস্ব প্রতিবেদক:
সদা হাস্যেজ্বল। ইনোসেন চেহারা। দেখে মনে হবেনা এই যুবকই একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী হতে পারে। কারণে বা অকারণে তার নামের পাশে শীর্ষ সন্ত্রাসীর তকমা কয়েক দশক আগেই লেগেছে। বলছিলাম নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকার খাঁন পরিবারের সন্তান জাকির খানের কথা। অনেকটা শামীম ওসমানের মতই জাকির খানর বিষয়েও দেশব্যাপী আলোচনা সমালোচনায় রয়েছে। হত্যা,চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে জাকির খানের বিরুদ্ধে অন্তত ৩৩টি মামলা হয়েছিল। এপর্যন্ত ৩০টি মামলা নিস্পত্তি হলেও ৩টি মামলা চলমান রয়েছে। এবং মামলা তিনটিতে জামিন রয়েছে। আগামী রোববার ১৩ এপ্রিল জাকির খান কারাগার থেকে বীর দর্পে বেরিয়ে আসবে। তাকে বরণ করার জন্য কয়েক হাজার ভক্ত ও কর্মী প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও আবাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে জাকির খান বেরিয়ে আসলে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবস্থা কেমন হবে তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যে।
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় আসামী ছিল জাকির খাঁন। ওই মামলায় খালাস পেয়েছে। আদালতের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ায় তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩টি মামলার আসামি ছিলেন জাকির খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১ এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে তিনি এবং মামলার অন্য আসামিরা খালাস পান।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মমিনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। এরপর জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব মন্ডল জানান, জাকির খানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল। এরমধ্যে ৩০টিতে তিনি খালাস পেয়েছেন। বাকি তিনটি মামলায় জামিনে আছেন। আদালতের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছেছে, তাই তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
এ মামলায় খালাস পাওয়া অন্যান্য আসামিরা হলেন—জাকির খানের দুই ছোটভাই জিকু খান ও মামুন খান, তার সহযোগী জঙ্গল ওরফে লিটন, মোক্তার হোসেন, নাজির আহমেদ, আব্দুল আজিজ এবং মৃত মনিরুজ্জামান শাহীন।
২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে মাসদাইর এলাকায় নিজ বাসার সামনে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হয় বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি সাব্বির আলম খন্দকার। নিহত সাব্বির বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) ও বর্তমানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের ছোট ভাই।
ঘটনার পর তার বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের তৎকালীন বিএনপি সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, জাকির খানসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়। সিআইডি তদন্ত শেষে ২০০৬ সালে জাকির খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
র্যাব জানিয়েছে, নব্বইয়ের দশকে জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন থেকে রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেন জাকির। পরে তিনি বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজিসহ বহু অভিযোগ রয়েছে। একসময় শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
সাব্বির হত্যা মামলার পর জাকির খান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান। এরপর প্রায় দুই দশক দেশে না থেকে ২০২১ সালে ভারত হয়ে ফের দেশে আসেন। পরে র্যাব তাকে রাধানীর বসুন্দরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।