ঝুট সন্ত্রাসীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে
সিদ্ধিরগঞ্জে রণক্ষেত্র,আহত ১০
Tnntv24.নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার ও ইপিজেডের ঝুট ব্যবসা দখলে নিতে ছাত্রদল ও বিএনপি’র নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপি ও ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। পুড়িয়ে দেয়া হয় কয়েকটি মোটর সাইকেল। এঘটনায় এক সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে আদমজী এলাকায় দিনব্যাপী দফায় দফায় এ সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল সোয়া চারটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের ভেতরে ইউনিভার্সাল ম্যানসওয়্যার লিমিটেড নামে একটি কারখানার সামনে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরের অনুসারী কয়েকজন নেতার উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের অনুসারী কর্মীরা। এই ঘটনায় পরে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ বাধে। গুলি ছোড়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সংঘর্ষে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক সাংবাদিক আহত হয়ে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, সংঘর্ষ চলাকালীন কয়েকটি মোটর সাইকেলে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর করা হয় কয়েকটি দোকান-পাট। একজন সাংবাদিকের মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়া হয়। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মুঠোফোনে ছাত্রদল নেতা রাকিবুর রহমান সাগর দাবি করেন, আওয়ামী লীগের নেতারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের দালালরা এখনও সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা মানুষকে স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা করতে দিচ্ছে না। বিকেলে ইপিজেডের ভেতরে আমাদের কয়েকজন ছাত্রদল নেতার উপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। হামলাকারীরা বিএনপি নেতা মনির হোসেনের অনুসারী।
ছাত্রদলের এই নেতার দাবি, হামলায় অংশ নেন বাবু ওরফে পাবনা বাবু, মানিক, রনি, মিজান ওরফে পাগলা মিজান, সম্রা, জালাল উদ্দিন, দুলাল, সালাউদ্দিন ও খোকনসহ শতাধিক লোকজন। হামলাকারীরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগ নেতা ও নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মতিউর রহমানের (যিনি বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে) অনুসারী ছিলেন। তাদের বর্তমানে শেল্টার দিচ্ছেন বিএনপি নেতা মনির হোসেন।
যদিও পাল্টা অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা মনির হোসেনের ভাগ্নে রুহুল আমিন। নিজেকে বিএনপির কর্মী পরিচয় দিয়ে রুহুল বলেন, ইপিজেড নিয়ন্ত্রণে নিতে চান ছাত্রদল নেতা সাগর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেলে ইপিজেডের ভেতরে আমাদের কিছু লোকজনের সাথে সাগরের লোকজনের হাতাহাতি হয়। পরে সাগর ও তার দলবল আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বলেন, ইপিজেডের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি হয়৷ পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়৷ এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালানোর খবরও আমরা পেয়েছি৷ এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি৷ পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ উভয়পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়৷