Tnntv24. নিজস্ব প্রতিবেদক:র
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় আরো একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। তার নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে জামাই মামুন। মামুন ত্বকী হত্যা মামলার অন্যতম আসামী শামীম ওসমানের ভাতিজা নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের আত্মীয় বলে জানিয়েছেন র্যাব।
মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় খাগড়াছড়িগামী একটি বাস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এতথ্য নিশ্চিত করেছেন তদন্তকারী সংস্থা র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে জামাই মামুন (৪০) বরিশাল সদরের চরমোনাই এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিমের ছেলে।
২০১৪ সালে মার্চে ত্বকী হত্যা মামলায় র্যাবের ফাঁস হওয়া একটি তদন্ত প্রতিবেদনে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে তার ব্যক্তিগত কার্যালয় ‘উইনার ফ্যাশন’ নামে ‘টর্চার সেলে’ নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে ১১ জনের সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হয়। ১১ জনের মধ্যে মামুনের নামও রয়েছে। তাকে ওই প্রতিবেদনে আজমেরী ওসমানের খালাতো বোনের জামাই বলে উল্লেখ করা হয়।
“ত্বকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার একাধিক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা জবানবন্দিতে এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার মামুনের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়েছেন। তবে, দীর্ঘদিন সে ঢাকায় আত্মগোপনে ছিল। মঙ্গলবার ভোররাতে তাবলীগ জামাতের ছদ্মবেশে ঢাকা হতে খাগড়াছড়ির রামগড় যাওয়ার পথে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাগড়াছড়িগামী বাস হতে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়”, বলে বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র্যাব।
গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমাণ্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। আদালত রিমাণ্ড শুনানির জন্য আগামী ৬ অক্টোবর তারিখ ধার্য করেন বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ শহরের শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় একটি পাঠাগারে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। পরদিন তার ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়, যেখানে দেখা যায় ত্বকী সারাবিশ্বে পদার্থবিজ্ঞানে সর্বোচ্চ ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছিলেন। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
দীর্ঘ সাড়ে ১১ বছরেও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্রও দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।
ত্বকীর পরিবার বরাবরই অভিযোগ করে আসছিলেন প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত থাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। তবে, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত এক মাসে এই হত্যা মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।