নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে যুবদল কর্মী নিহতের ঘটনার দুই বছর পর মামলা
পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমান আসামী
Tnntv24.নাফিজ আশরাফ:
নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে শাওন আহমেদ নামে এক যুবদল কর্মী নিহতের ঘটনার দুই বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে নিহতের বড় ভাই মিলন মিয়া বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডের থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় নারায়ণগঞ্জের সদ্য সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। সেই সাথে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, ৫ আসনের সেলিম ওসমান, ২ আসনের নজরুল ইসলাম বাবু, ১ আসনের গাজী গোলাম দস্তগীর, ৩ আসনের লিয়াকত হোসেন খোকা সহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর র্যালিতে পুলিশের গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন আহাম্মদ নিহতের ঘটনার তার বড় ভাই মিলন মিয়া বাদি হয়ে ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০০ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা মিলনায়তনের সামনে থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা একটি বিশাল র্যালি বের করে। র্যালিটি নগরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় পৌঁছলে পুলিশ প্রথমে লাঠি চার্জ এবং পরে গুলি বর্ষণ করে। ঘটনার এক পর্যায়ে ডিবি পুলিশের তৎকালীন এসআই মাহফুজুর রহমান কনক চায়নিজ রাইফেল দিয়ে একের পর এক গুলি বর্ষণ করলে যুবদল কর্মী শাওন আহাম্মদ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সেই সাথে পুলিশের গুলিতে আহত হন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের আরও ২৫ নেতাকর্মী।
মামলার বাদি মিলন মিয়া বলেন, আমার ভাই শাওন ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর র্যালিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট একটি ঘটনা ছিল। কিন্তু পুলিশ ঘটনার পর প্রথমে আমার ভাইকে যুবলীগ কর্মী বানাতে চেয়েছিল। সেটিতে ব্যর্থ হয়ে ভাইয়ের লাশ আটকে রেখে লাশ হস্তান্তরের কথা বলে আমার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরে জানতে পারি আমি নাকি বিএনপির পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। পরে আমি আদালতে মামলাটির বিষয়ে নারাজি দিলে পুলিশ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বাধ্য হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ঐ সময় আমার পরিবারকে পুলিশ জিম্মি করে রেখেছিল। যে কারণে আমি ঐ সময় ভাই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারিনি। এখন দেশের রাজনেতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছি। আশা করছি এই সরকারের আমলে ভাই হত্যার ন্যায় বিচার পাবো।