নাহিদ ইসলাম বলেছেন,আওয়ামী লীগ
নিষিদ্ধ করা এখন গণদাবি
Tnntv24.নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নেই। দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এখন বাংলাদেশের মানুষের গণদাবি। এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। আগেও বলেছি, এখনও বারবার করে বলছি— এই দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নেই। বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না। ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।
তিনি বলেন, এখন প্রশ্ন হলো, সেই রায় কীভাবে কার্যকর হবে? এটি আলোচনার বিষয়। যেহেতু বিচার প্রক্রিয়া চলছে, আমরা বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল। রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
ঈদের আনন্দের মাঝেও এক ধরনের শূন্যতা কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে আমরা যেসব ভাই-বোনকে হারিয়েছি, তাদের ছাড়া অনেকগুলো পরিবার ঈদ পালন করছে। তাদের কষ্ট ভাগ করে নিতে এবং শহীদদের স্মরণ করতেই আমরা জুরাইন কবরস্থানে এসেছি। এখানে ১০-১২ জন শহীদের কবর রয়েছে। আমরা কবর জিয়ারত করেছি এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।
আওয়ামী লীগের বিচারের প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই শহীদ পরিবারগুলোর সামনে আমরা মুখ তুলে দাঁড়াতে পারবো না, যদি তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করতে পারি। সরকার থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা দেওয়া হলেও, শহীদ পরিবারগুলোর কাছে সেটি বড় বিষয় নয়। তাদের প্রধান দাবি— ন্যায়বিচার।
তিনি বলেন, আমাদের দলীয় এজেন্ডায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে— বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচন। এর মধ্যে আমরা বিচারকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা আপাতত বলছি, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করা উচিত। তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। শহীদ, আহত পরিবারসহ দেশের জনগণের গণদাবি হচ্ছে— আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারকে সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যেসব প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত। মাসিক ভাতা দেওয়ার ঘোষণা থাকলেও, খুব কমসংখ্যক পরিবারই সেটি পেয়েছে। আমরা আশা করবো, সরকার এসব বিষয়ে আরও আন্তরিক হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন— এই তিনটি এজেন্ডার মধ্যে বিচারকে আমরা প্রথমে রেখেছি এবং সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা চাই, আওয়ামী লীগের অপকর্মের সুষ্ঠু বিচার হোক এবং দেশ একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে যাক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ, শহীদ পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের একমাত্র দাবি— আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ। আমরা চাই, এই দাবি বাস্তবায়িত হোক এবং দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নতুনভাবে গড়ে উঠুক।