যাত্রার ঝক্কি এড়াতে গিয়েও মৃত্যু ঠেকিতে পারলনা মুক্তা ও বিল্লাল। সাথে তিন বছর বয়সী কন্যা সন্তানটিও মা বাবা’র সাথে পাড়ি জমাল ওপারে।
সন্তানসম্ভবা স্ত্রী মুক্তা বেগমকে বাড়িতে রেখে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন বিল্লাল হোসেন; যাত্রার ঝক্কি এড়াতে বেছে নিয়েছিলেন ঈদের দিনকে।
স্বস্তির যাত্রার আশায় ভিড় এড়াতে পারলেও মৃত্যুকে ঠেকাতে পারেননি মুক্তা আর বিল্লাল। সদরঘাট দিয়ে দক্ষিণের পথে তাদের সেই যাত্রা পরিণত হয়েছে শেষযাত্রায়। অনাগত সন্তানের পাশাপাশি একমাত্র মেয়ে তিন বছর বয়সী মাইশা আক্তারও তাদের সঙ্গে মৃত্যু পথযাত্রী হয়েছে।
সদরঘাটে একটি লঞ্চের ছিঁড়ে যাওয়া রশির প্রবল আঘাতে ধরাশায়ী হয়েছেন তারা, ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাদের দেহ; তিনজনের লাশ একসঙ্গে বুঝে নিতে আসা স্বজনরা মেনে নিতে পারছেন না এমন মৃত্যু।
সপরিবারে নিহত মুক্তা সাড়ে ৬ থেকে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার আত্মীয়রা। তারা বলছেন, বেলাল পারিবারিকভাবে অসচ্ছল ছিলেন। তার বাবা-মা নেই। পোশাক কারখানার স্বল্প বেতনের কর্মী ছিলেন বেলাল। বেলাল-মুক্তা দম্পতির সংগ্রামী জীবনে স্বাবলম্বী হতে চাকরির পাশাপাশি স্ত্রীকে নিয়ে ব্যবসায়ও শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ব্যবসা আপাতত বন্ধ রেখে স্ত্রীকে গ্রামে রেখে আসতে চেয়েছিলেন বেলাল। তাই ভিড় এড়িয়ে রওয়ানা করেছিলেন ঈদের দিন।
এ তিনজনের সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে আরও দুইজনের, যারা ঈদের সময় বাড়তি আয়ের আশায় রয়ে গিয়েছিলেন ঢাকায়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি যেতে বেছে নিয়েছিলেন এ দিনকে। প্রিয়জনদের সঙ্গে তাদের ঈদ আনন্দ আর ভাগাভাগি করা হলো না।