নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রম্মপুত্র নদে চলছে স্নানোৎসব। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাপমোচন পুণ্য স্নান তীর্থ ভূমি লাঙ্গলবন্দে মঙ্গলবার ধর্মীয় পবিত্র মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসব শেষ হবে। আগত পূর্ণার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। আয়োজকদের মতে উৎসবে নদের ১৮টি ঘাটে প্রায় ১০ লাখ পুণ্যার্থী সমাগম হবে। উৎসব উপলক্ষ্যে তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দুইদিন ব্যাপী চলছে মেলা।
পুরান মতে, হিন্দু দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে গোসল করে পাপমুক্ত হন। লাঙ্গল দিয়ে চষে হিমালয় থেকে এ পানিকে ব্রহ্মপুত্র নদরূপে নামিয়ে আনেন সমভূমিতে। পৌরাণিক এ কাহিনীকে স্মরণ করে প্রতি বছর নির্ধারিত দিনে লাখ লাখ তীর্থযাত্রী পুণ্য লাভের আশায় জড়ো হন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রম্মপুত্র নদে।
আয়োজকদের মতে পাশ্ববর্তী ভারত ও নেপাল সহ দেশ-বিদেশের অনেকে অংশ নেয় পবিত্র মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসবে। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাপমোচন পুণ্য স্নানার্থে এক অন্যন্য তীর্থ ভূমি বন্দরের লাঙ্গলবন্দে শুরু চলছে ধর্মীয় পবিত্র মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসব। শুল্কা তিথি অনুযায়ী সোমবার বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটে লগ্ন শুরু হয়। শেষ হবে মঙ্গলবার বিকেল ৪ টা ৪৭ মিনিটে। তবে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ১০ মিনিট থেকে ১০ টার মধ্যে রয়েছে অমৃত যোগ। দুই দিন ব্যাপি এ স্নান উৎসব কে ঘিরে তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জমে উঠেছে মেলা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রেমতলা, অন্নপূর্না, রাজঘাটসহ নদের ১৮ টি ঘাটে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লবসহ প্রতি ঘাটে স্নান আয়োজন ছিল। নদে কচুরীপানা পরিস্কার, নদীতে খনন সহ সব কিছু ভাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন পূণ্যার্থীরা। স্নানোৎসবে আসা পূন্যার্থীরা জানান পাপ মোচনের আশায় তারা এই ব্রাক্ষ্মপুৎত্র নদে স্নান করতে আসেন।
‘হে সমহাভাগ ব্রম্মপুত্র হে লৌহিত্য তুমি আমার পাপ হরন কর’ এ মন্ত্র উচ্চারণে স্নান করে পাপ মোচনের তীর্থযাত্রী পুন্যলাভের আশায় স্নান করে থাকেন বলে জানালে ঘাটের সেবায়েত। তিনি বলেন, এখানে স্নান করলে পাপ মোচন শেষে পর্ণতা লাভ হয়।
আয়োজকদের দাবী ভারত ও নেপালসহ দেশ-বিদেশের এবারের স্নানোৎসব প্রায় ১০ লাখ মানুষকে সমাগম ঘটেছে। স্নান উৎসব কমিটির সমন্বয়ক শিখন সরকার জানান কমিটির পক্ষ থেকে তিন কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে সব ধরনের সেবা সহায়তার আয়োজন করা হয়েছে।
স্নানে আসা লোকদের সেবাদানে প্রতি বছরের মত এ বছরও বিভিন্ন সংগঠন, সেচ্ছাসেবী ও স্থানীয়রা সেবা কেন্দ্র করেছেন।