নারায়ণগঞ্জ শুক্রবার | ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বসন্তকাল | ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  সর্বশেষ
জাকির খাঁন মুক্ত হলে শহরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কি পরিবর্তন হবে,এমন প্রশ্ন অনেকের।Nafiz Ashraf.Tnntv24
জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষ,বিতর্কিত পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলেরএসিল্যান্ডের বদলি।Nafiz Ashraf.Tnntv24
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে।Nafiz Ashraf.Tnntv24
আজ ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সারা দেশে একযোগে শুরু হচ্ছে।Nafiz Ashraf.Tnntv24
এমন নারায়ণগঞ্জ গড়ব সন্তানরা যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।Nafiz Ashraf.Tnntv24
দীর্ঘ ১৪ বছর পর বিকেএমইএ নির্বাচনের আলো ফোটাতে যাচ্ছে ।Nafiz Ashraf.Tnntv24
রূপগঞ্জের কামসাইর ইমান ভূঁইয়া ক্রিয়েটিভ স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা:Nafiz Ashraf.Tnntv24
রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি শাহ আলম-সম্পাদক ওবায়দুর রহমান:Nafiz Ashraf.Tnntv24
বিএনপি নির্বাচনি রোডম্যাপ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।Nafiz Ashraf.Tnntv24
বাংলাদেশের কাছে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার মতো দুর্দান্ত সব আইডিয়া আছে-প্রধান উপদেষ্টা।Nafiz Ashraf.Tnntv24
Next
Prev

ইসলামে বিধবা বিয়ের বিধান

ইসলামে বিধবা বিয়ের বিধান

Facebook
WhatsApp
LinkedIn
ইসলামে বিধবা বিয়ের বিধান
মানুষের জীবনের অনিবার্য সত্য হচ্ছে মৃত্যু। কখন কার জীবনের বিদায়ঘণ্টা বেজে উঠবে তা কেউ জানে না। পৃথিবীতে মানুষের আগমনের সিরিয়াল ও ক্রমধারা থাকলেও পৃথিবী থেকে বিদায়ের কোনো সিরিয়াল নেই। কখনো স্বামীর আগে স্ত্রী মারা যায় আবার কখনো স্ত্রীর আগে স্বামী মারা যায়। এটাই স্বাভাবিক, বিচিত্র কিছু নয়। এখানে কারও মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। কিন্তু সমাজে কোনো পুরুষের স্ত্রী মারা গেলে ওই পুরুষের জন্য পরিবার ও সমাজের মানুষের অনুতাপের কোনো সীমা থাকে না। মাস না যেতেই তাকে বিয়ে করাতে উঠেপড়ে লেগে যায়। সমাজ ও পরিবার পুরুষের বিয়ের ক্ষেত্রে যতটা আগ্রহ দেখায় নারীদের ক্ষেত্রে অনেক সময় বিপরীত চিত্র দেখা যায়। কোনো নারীর স্বামী মারা গেলে অনেকেই তাকে দ্বিতীয়বার বিয়ের ব্যাপারে অনুৎসাহিত করে। এ ক্ষেত্রে নারী যদি নিজের থেকে বিয়ের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তখন মানুষ তাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখে। আবার অনেক ক্ষেত্রে তো দেখা যায়, স্বামীর মৃত্যুর জন্য স্ত্রীকে দায়ী করে তাকে ‘অপয়া’ বা ‘অলক্ষ্মী’ বলে থাকে। এভাবেই সমাজে বিধবা নারীরা অবহেলিত ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হয়ে থাকেন। অথচ বিধবা হওয়ার পর নারীকে সামাজিক মর্যাদা এবং নিরাপত্তার জন্য পুনরায় বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তা প্রতিষ্ঠা করেছে।
ইসলাম বিধবা নারীদের বিয়ের ব্যাপারে শুধু অনুমোদন নয়, উৎসাহও দিয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, ‘আর যারা তোমাদের মধ্য হতে মৃত্যুবরণ করে এবং স্ত্রীগণকে রেখে যায়, উক্ত স্ত্রীগণ নিজেদের বিরত রাখবে চার মাস দশ দিন। অতঃপর যখন তারা ইদ্দত পূর্ণ করবে, তখন তারা নিজেদের ব্যাপারে বিধিমতো ব্যবস্থা নিলে কোনো গুনাহ হবে না।’ (সুরা বাকারা : ২৩৪)
নারী হোক বা পুরুষ, কারোই বিয়ে ছাড়া একাকী জীবনযাপন করাটাকে ইসলাম পছন্দ করে না। এ মর্মে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ‘আয়ামা’ তাদের বিয়ে করিয়ে দাও’ (সুরা নুর : ৩২)। এ আয়াতে ‘আয়ামা’ শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো এমন নারী-পুরুষ যারা বর্তমানে বিয়েহীন অবস্থায় রয়েছে। এমন নারী-পুরুষকে বিয়ে দেওয়ার জন্য কুরআন অভিভাবকদের নির্দেশ দিয়েছে। এই বিধানের দাবি এটাই যে, কোনো নারী-পুরুষ যেন বিয়ে ছাড়া না থাকে। সমাজে ব্যভিচার বন্ধের প্রধানতম পথ হলো বিয়ে। আর কুমারী মেয়েদের তুলনায় বিধবা নারীদের বিয়ের গুরুত্ব আরও বেশি। কারণ তারা স্বামীর সঙ্গে সময় কাটিয়েছে। এখন একাকী সময় কাটানো তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া তাদের বিয়ে না হলে তাদের শারীরিক সুস্থতা, ইজ্জত-আব্রু, কখনো কখনো দ্বীন-ধর্ম সবকিছুই বরবাদ হয়ে যেতে পারে।
বিধবা নারীদের দ্বিতীয় বিয়েতে ইসলামে কোনো নিষেধ নেই, বরং ইসলাম দ্বিতীয় বিয়েকে উৎসাহিত করেছে। রাসুলের (সা.) স্ত্রীদের মধ্য হতে শুধুমাত্র উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) ছাড়া সবাই ছিলেন বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্তা। স্বয়ং বিশ^নবী (সা.) যুবক বয়সে প্রথম যাকে বিয়ে করেন তিনিও ছিলেন একজন বিধবা নারী। বিশ^নবী (সা.) প্রথমেই বিধবা নারীকে বিয়ে করার মাধ্যমে বিধবা নারীদের পক্ষ অবলম্বন করে জগদ্বাসীদের মধ্যে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। বিধবাদের বিয়ে করা দোষের কিছু নয়। তিনি যে শুধু বিধবাদের বিয়ে করেছেন তা নয়, বরং বিধবা নারীদের বিয়ের ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিধবা ও মিসকিনদের সহায়তা দানকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী অথবা রাত্রিবেলা সালাত আদায়কারী ও দিনে সিয়াম পালনকারীর ন্যায়।’ (বুখারি : ৫৩৫৩)
বিধবা নারীদের সহায়তা করা সওয়াবের কাজ। আর সহায়তার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো তাকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। একজন পুরুষের যেহেতু চারজন পর্যন্ত বিয়ে করার সুযোগ রয়েছে, তাই সুযোগ থাকলে বিধবা নারীকে বিয়ে করার মাধ্যমে সহায়তার সুযোগ গ্রহণ করা। সমাজে অনেকে অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে (শরিয়তসিদ্ধ না হওয়া সত্ত্বেও) গার্লফ্রেন্ড রাখে, রক্ষিতা রাখে, পতিতাকে বেছে নেয়। অথচ এ ক্ষেত্রে একজন বিধবা নারীকে বিয়ে করার মাধ্যমে নিজের অতিরিক্ত চাহিদা মিটিয়ে সওয়াব অর্জন করতে পারে এবং গুনাহ থেকেও নিজেকে বাঁচাতে পারে। সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব, যেসব পুরুষরা বিধবা নারীদের বিয়ে করে তাদের ভর্ৎসনা বা বাঁকা চোখে না দেখে তাদের উৎসাহ প্রদান করা।
তবে হ্যাঁ, কোনো বিধবা নারীর যদি বিয়ের বয়স না থাকে অথবা সে বিধবা হওয়ার পরও এতিম সন্তানদের লালন-পালনের উদ্দেশ্যে বিয়ে করতে না চায়, কষ্ট হলেও একাকী জীবনযাপনের পথ বেছে নেয় এবং নিজের চরিত্র, ইজ্জত-আব্রু রক্ষার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, তা হলে এমন বিধবা নারীকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। এরূপ বিধবা নারীর জন্য বিশ্বনবীর (সা.) বাণীতে রয়েছে সান্ত্বনা পুরস্কারের ঘোষণা। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি এবং (নিজের যত্ন না নেওয়ায়) চেহারায় দাগ পড়া নারী পরকালে এভাবে থাকব অথবা মধ্যমা আঙুলের চেয়ে বেশি দূরত্ব থাকবে আমাদের মধ্যে। সে হলো সেই নারী, যার স্বামী মারা গেছে এবং তার বংশীয় মর্যাদা ও সৌন্দর্য থাকার পরও সে নিজেকে (বিয়ে থেকে) বিরত রাখে এতিম সন্তানদের জন্য-যতক্ষণ না সন্তানরা (স্বাবলম্বী) পৃথক হয়ে যায় অথবা মারা যায়।’ (আবু দাউদ : ৫২৪৯)
পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মে বিধবাদের অবমূল্যায়ন করা হলেও ইসলাম ধর্ম বিধবাকে মূল্যায়ন করেছে। তার অধিকার সংরক্ষণ করেছে। বিধবাকে কখনো ‘অপয়া’ মনে করেনি। কিন্তু কিছু কুসংস্কারের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিধবাদের অনেক ক্ষেত্রে প্রাণ দিতে হয়েছে, হতে হয়েছে নির্যাতিত, নিপীড়িত। আর যেন কোনো বিধবা নারী নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার না হয় এ ব্যাপারে সরকার, প্রশাসনসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। আসুন আমরা সবাই বিধবাদের সহযোগিতার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। আল্লাহ বোঝার ও আমল করার তওফিক দান করুন।

এ সম্পর্কিত আরো খবর...

error: Content is protected !!