দখল ও দূষণে বিলীন
শত বছরের খাল
Tnntv24.স্টাফ রিপোর্টার রূপগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মাহনা এলাকার শত বছরের পুরোনো “বড় বিল-কাত্রা-দড়িকান্দি” খাল খননের অভাবে দখল ও দূষণে নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েক হাজার কৃষক পরিবারকে। বিভিন্ন সময়ে খালটি খননের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে এলাকাবাসী। এতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

বড় বিল-কাত্রা-দড়িকান্দি
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের মাহনা এলাকার বড় বিল, বাজবির বিল, দেঢ় বিল মিলিয়ে এখানে প্রায় ৬ হাজার বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। এসব জমিতে ধান সহ বিভিন্ন মৌসুমী ফসলের আবাদ করে ফলানো ফসলের উপর নির্ভর করে চলে অন্তত ৩ হাজার পরিবারের মানুষজনের আহার। অথচ এলাকার সবচেয়ে পুরোনো প্রায় ১ শত বছরের ঐতিহ্যের বড় বিল-কাত্রা দড়িকান্দি খালটি ময়লার স্তূপ ও বালুর ড্রেজারের পাইপ ফেটে বালু পড়ে ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাসন বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ১০ বছর আগে। ফলে এসব এলাকার পানি নিষ্কাসনের অভাবে ও স্থানীয় মিল-কারখানার ড্রাইয়িংয়ের কেমিক্যাল পানিতে মিশে কৃষিজমির উর্বরতা
হারাচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টির পানি জমে মানুষের বাড়ি-ঘরে ঢুকে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ভুক্তভোগীদের গণস্বাক্ষরিত স্মারকলিপি উপজেলা প্রশাসন ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়ার কাছে জমাদেন এলাকাবাসী। পরে বিএনপির এ নেতার নিজস্ব অর্থায়নে গত ২৩ মার্চ রবিবার সকালে মাহনা দক্ষিণ পাড়া এলাকা থেকে খালটি খননের কাজ শুরু করা হয়। তবে, এ অর্থায়নে খালটির খনন কাজ শেষ হবে না জানিয়ে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা চান ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মনির হোসেন বলেন, প্রায় শত বছরের পুরোনো আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘের এ খালটি খননের অভাবে এলাকার প্রায় ৬ হাজার বিঘা কৃষি জমি কৃষি কাজের অনুপযোক্ত হয়ে পড়েছে। পরে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া খাল খননে অর্থ সহায়তা দেন। ২৩ মার্চ রবিবার থেকে খালটি খননের কাজ শুরু করা হয়। তবে, এ অর্থে খালটি পূর্ণ খননের কাজ শেষ করা যাবে না।
তাই জনস্বার্থে সরকারের সহযোগীতা চান ভুক্তভোগীরা। এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ কৃষক হুমায়ুন কবির ভূইয়া বলেন, এ খালটি বড় বিল-কাত্রা দড়িকান্দি হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদীতে মিশেছে। এক সময় এই বিলে প্রচুর পরিমানে মাছ পাওয়া যেতো। কিন্তু কালের বিবর্তণে পচা নর্দমায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে ও স্থানীয় শিল্পকারখানার ড্রাইংয়ের কেমিক্যাল মেশায়, এ বিলের জলাভূমিতে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তাছাড়া বৃষ্টির পানি জমে মানুষের বাড়ি-ঘরে উঠে। এসব পচা দূর্গন্ব পানিতে এলাকাবাসী প্রায়শই বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে।
সাংবাদিক মীর শফিকুল ইসলাম জানান, প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ খালটির প্রন্থ ছিল ১৬-২২ ফুট পর্যন্ত। অথচ পচা নর্দমায় এ খালটি এখন কোথাও কোথাও ৩ ফুটে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতাদের ড্রেজারের পাইপ ফেটে খালে বালু পরে ভরাট হয়ে যাওয়ায় আশপাশের কৃষি জমি আবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, কেউ কৃষি আবাদে বাঁধা প্রদান করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খালটির বিষয়ে খোঁজ -খবর নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।