Tnntv24.রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
প্রভাব বিস্তার, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, অনিয়ম ও অবৈধ নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে চাকুরি করাসহ নানা অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে উত্তেজনায় এএসসি নির্বাচনী পরিক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এতে করে পাঠদানে চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত এ বিক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয় শিক্ষার্থীদের মাঝে।
জানা গেছে, রূপগঞ্জের প্রানকেন্দ্র ভুলতা এলাকা। আর সেখানে অবস্থিত ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ। স্কুলে প্রভাব বিস্তার করতে অনেকেই উঠেপড়ে লেগেছে। প্রভাব বিস্তার, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরন, অনিয়ম ও অবৈধ নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে চাকুরি করাসহ নানা অভিযোগে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া জান্নাতের অপসারনের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে এবং উত্তেজনায় এএসসি নির্বাচনী পরিক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। খবর পেয়ে রূপপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারিকুল ইসলাম ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে প্রতিষ্ঠানে শৃংখলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
অভিযোগ উঠেছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন , শিক্ষক পিযুষ কুমার হীরা, রায়হান সরকার, সোহান পারভেজ, সাইদুর রহমান ও হুমায়ুন কবির গত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে স্থানীয় এমপির প্রভাব খাটিয়ে জোরপুর্বক ও স্বাক্ষর জাল করে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিয়োগ পায়। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারি আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়ালকে অব্যাহতি দিতে বাধ্য করা হয়। এরপর অবৈধ নিয়োগে চাকুরি করা সুরাইয়া পারভীনকে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ্যের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। সুরাইয়া পারভিনের নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে হয়রানি, প্রভাব বিস্তার, খারাপ আচরন ও অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আশ-পাশে শিক্ষার্থীদের ইভটিজিংয়ের ঘটনাও ঘটছে। বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরা উল্টো হয়রানি শিকার হচ্ছেন। নানা বিষয় নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঝামেলার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে পাঠদানে চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে। ইতি মধ্যে ১২’শ শিক্ষার্থী স্থলে বর্তমানে কমে ৮’শ শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে এ সংখ্যা আরো কমবে। পুর্বের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়ালই সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন।
এ বিষয়ে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন বলেন, আমিসহ আমার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগের যে বিষয়টি আনা হয়েছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, অনিয়মসহ যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সম্পূর্ণ বৈধ ভাবে আমাদের নিয়োগ হয়েছে এবং সঠিক ভাবেই পাঠদান চলছে। কিছু উশৃংখল ছেলে-মেয়ে টাকা খেয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, নিয়োগের ব্যপারে কোন প্রকার যদি জালজালিয়াতি বা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাৎক্ষনিক তার চাকুরি থাকবেনা। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অভিযোগ পাচ্ছি শিক্ষার্থীদের এখনও পাঠদানসহ প্রতিষ্ঠানে শৃংখলা ফেরাতে পারেনি। এ বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।