ছাত্র দল নেতা জিসান হত্যা মামলায়
আসামী বিএনপি নেতারা
Tnntv24.নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জিসান হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএনপি ও ছাত্র দলের ১ ডজন নেতা কর্মীকে।
আলমগীর হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে নাঈম (২৪) পিতা,কামাল, কামাল (৫২) পিতা-অজ্ঞাতসহ মোট ৩০ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরো১৫/ ২০ জন। বিএনপির প্রবীণ নেতা তাইজুল ইসলাম (৭৭),তাইজুল ইসলামের দুই পুত্র সনজিব(৪৬) সাগর (৪৪),অংকন ভুইয়া (২২),নুরু (২৫), লিমন ভুইয়া, (৩৮), সৈকত ভুইয়া (২৭) নাফিজ ভুইয়া (২৪)তানজিল ভুইয়া (২১),রোমান (৩৪), সায়মন (৩২),রাকিব মোল্লা (২১),নজরুল (৪৪),ও শান্ত (৩৮) মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এক বিবৃতীতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১২ নেতা কর্মীকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।এ ঘটনাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিত অভিহিত করে দায়ের কৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের ূ দাবি জানান।
যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনায় কুচক্রী মহল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সম্পূর্ন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাদের হয়রানি করার হীন উদ্দেশ্যে স্থানীয় আওয়ামী নেতাকর্মীদের যোগ সাজশে এবং প্রশাসনের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যার একটি মিথ্যা মামলায় সম্পৃক্ত করে। প্রকৃতপক্ষে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের হত্যা কান্ড ঘটেনি বন্ধুর হাতে খুন হয়েছে মর্মে আদালতে দায়ের করা হত্যা মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এস আই) আসাদ বলেন,আমি প্রাথমিক ভাবে তদন্ত করে পেয়েছি জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে জিসানকে হত্যা করা হয়েছে।বর্তমানে মামলাটি সিআইডির অধীনে তদন্তাধীন রয়েছে।এব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (,গ, সার্কেল মেহেদী হাসান বলেন থানায় মামলা দায়েরের পর পুনরায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই মিঠাব সিকদার বাড়ী এলাকায় সড়কের পাশে জমি কেনা–বেচা কে কেন্দ করে বন্ধুর ছুড়ির আঘাতে নিহত হন দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির ছাত্র তাওহিদুল আলম জিসান (২১) ভুলতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলমগীর মোল্লার পুত্র । তারমধ্যে বিএনপির প্রবীণ নেতাসহ ১২ জনই ছাত্র দলের নেতা কর্মীবলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর (৭০) রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন (৫২) দাউদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর মাষ্টার ( ৫৮) সহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়। ওই মামলায় রূপগঞ্জের ভুলতা ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক নেতা তাইজুল ইসলাম,২ নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি নজরুল মোল্লা বিএনপির ২নং ওয়ার্ডের ছাত্র দলের সভাপতি অংকন ভুইয়া, ২নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নুরু,লিমন যুবদলের সদস্য, সনজিব যুবদলের সদস্য, নাফিজ ভুইয়া ছাত্র দলের সদস্যকে আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এ মামলাকে মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক অ্যাখ্যা দিয়ে যুবদল কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রকৃত আসামি কে আড়াল করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়া হবে।রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শুক্কুর আলী মোল্লা বলেন ‘, জিসান মোল্লা বন্ধুর হাতে খুন হয়েছে, তার বাড়ী আমার বাড়ির পাশে। ২নং ওয়ার্ডের যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মুরাদ হোসেন একই কথা বলেন। ভুলতা ইউনিয়নের সাবেক -সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর মোল্লা নিহতের চাচা গত ১ আগষ্টে বিভিন্ন টেলিভিশনে সাক্ষাৎ কারে বলেছেন সন্রাসীরা তার ভাতিজা জিহাদ কে মেরে ফেলেছে। এবং তার দাদা আওলাদ হোসেন বলেছেন সুমির ভাড়াটিয়া নাঈম জমি সংক্রান্ত বিষয়ে জিসান কে হত্যা করেছে। জিসান হত্যার ১ মাস ১০ দিন পর আগের ২ জনসহ ২৮ জনকে আাসামী করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রূপগঞ্জের বিএনপির সকল নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকার পতনে তারা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। সেই সকল বিএনপির নেতাকর্মীরা দায়েরকৃত এ মামলায় কীভাবে আসামী করা হয় তা আমার বোধগম্য নয়।’
এর আগে গত ৩০ জুলাই মঙ্গলবার রাত ৮ টার সময় সিকদার বাড়ির পাশে ১০/১২ জন বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছিল। বন্ধু অংকন ও জহিরুলের ভাস্যমতে হঠাৎ করে জিসান বন্ধু নাঈমকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে। তখন সকল বন্ধুরা মিলে দুইজনকে কোলাকুলি করে মিটমাট করে দেয়। তার কিছুক্ষন পর রাত সাড়ে ৮টার সময় আবারও নাঈম কে মারার জন্য ছুটে আসে জিসান। ঘাতক নাঈম জিসানের ছুড়ি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়। তৎক্ষনাৎ তাদের মধ্যে বন্ধু সৈকত অংকন, জহিরুল স্হানীয় মুড়াপাড়া একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হইলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঐ সময়ের কর্তব্যরত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ইনচার্জ মোঃ বাচ্চু মিয়া জিসানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ গত ৩১ জুলাই বুধবার মৃত জিসানের পিতা আলমগীর মোল্লা বাদী হয়ে তাওহিদুল আলম জিসান (২১) নিহতের ঘটনায় করা মামলায় ১নং আসামী নাঈম ও তার পিতা কামাল । ঐ সময়ের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন,জমি কেনা-বেচা নিয়ে জিসান নিহত হয়েছে।
ভুলতা ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় আসামী করা প্রসঙ্গে নারায়নগঞ্জ জেলার সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাহবুবুর রহমান এ দাবি জানান, আওয়ামী নেতাকর্মীদের যোগসাজসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের জড়ানো হয়েছে।
এসব মামলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের অব্যহতি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিগত দিনে আমরা যেভাবে লড়াই করেছি, সেভাবে ভবিষ্যতেও তাদের রুখতে একবিন্দুও ছাড় দেবোনা। তাদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে ফ্যাসিবাদ-বাকশালের মূল উৎপাটন করবো ইনশাল্লাহ। তারা জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যান হয়ে নানান ষড়যন্ত্র করে চলেছে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে। আমরা সকলকে সতর্ক ও সদা সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানাচ্ছি।