Tnntv24.নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুন ঘটনার ১১ বছর পূর্ণ হলো। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের ৩৩ মাস পর জেলা জজ আদালতে রায় ঘোষণা এবং ১৯ মাসে হাইকোর্টে রায় হলেও আপীল বিভাগে সাড়ে ৭ বছরেও এর নিস্পত্তি হয়নি। জেলা জজ আদালতে ৩৫ আসামীর মধ্যে ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড, ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিলেও হাই কোর্ট ১৫ জনের মৃত্যুদন্ড, অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে অপহরণ হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবি চন্দন সরকারসহ সাতজন। অপহরণের তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দরের শান্তিরচর এলাকা থেকে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও আইনজীবি চন্দন সরকার, তাঁর গাড়িচালক মো. ইব্রাহীমসহ সাত জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ফতুল্লা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়।
আদালত আসামীদের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি ও স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৩৩ মাস পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত
২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রধান আসামী নূর হোসেনসহ র্যাব-১১ চাকুরিচ্যুত তিন কর্মকতা লেফটেনেন্ট কর্ণেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেনেন্ট কমান্ডার এম এম রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড ও ৭ জনকে ১০ বছর করে এবং ২ জনের বিরুদ্ধে ৭ বছর করে কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৭ সালে ২২ আগস্ট হাই কোর্ট ১৫ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ বহাল রাখেন। আর অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। কিন্তু আপীল বিভাগে সাড়ে ৭ বছরেও এর নিস্পত্তি হয়নি।
মামলায় সাজা প্রাপ্ত আসামীরা আওয়ামীলীগের নেতা ও শীর্ষ নেতাদের আত্মীয় হওয়ায় ফ্যাসিস্ট সরকার রিভিও শুনানীতে বিচার কাজ স্থবির করে রেখেছে বলে অভিযোগ আইনজীবি সাখাওয়াত হোসেন খাঁনের। দ্রুত বিচার কাজ শেষ করে রায় কার্য্যকর করার দাবী জানিয়ে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
সাত খুন মামলাটি যেন দ্রুত নিম্পত্তি হয় সে জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ থেকে দায়িত্ব নিয়ে নানা প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছেন জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো: আবুল কালাম আজাদ জাকির বলেন,
শুধু নারায়ণগঞ্জ নাগরিক সমাজই নয় নিম্ম আদালতের রায় বহাল থাকবে এবং দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করার দাবী সাধারণ মানুষেরও। রায় বাস্তবায়িত হলে এটা ক্ষমতাধর অপরাধীদের জন্য দৃষ্টান্ত ও যুগান্তকারী হয়ে থাকবে বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জবাসী।