বাণিজ্যমেলায় খাবারের দাম
বেশি মান কম
Tnntv24.শফিকুল আলম ভুইয়া, স্টাফ রিপোর্টার রূপগঞ্জঃ
ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থী জমজমাট থাকলেও অন্যদিনগুলোতে থাকছে অনেক কম। ১ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনুস উদ্ভোধনের পর থেকে মেলা চলছে। এবারের বাণিজ্য মেলায় বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান বসেছে। নামি দামি ব্যান্ড ব্যবহার করে দর্শকদের প্রতারিত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাজির বিরিয়ানী নামে বিক্রি হওয়া খাবারে সেই স্বাদ নেই বলেও অভিযোগ করেন অনেকে।
বিগত বছরগুলোতে বাণিজ্যমেলার রেস্তোরাঁগুলোয় তদারকি করত ভোক্তা অধিকার। এবার কোনো তদারকি নেই। ফলে মানহীন রেস্তোরাঁয় ছেয়ে গেছে এবারের বাণিজ্যমেলা। একে তো মানহীন খাবার। তার ওপর দাম আকাশছোঁয়া। ফলে দুদিক থেকেই ঠকতে হচ্ছে মেলায় আগতদের। মানহীন খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মেলার কর্মচারীরাও। বাধ্য হয়েই রেস্তোরাঁর খাবার চড়া দামে কিনতে হচ্ছে স্টলের কর্মচারী ও দর্শনার্থীদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার মেলার বিভিন্ন খাবার দোকানগুলি ঘুরে দেখা যায়, বাণিজ্য মেলায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের খাবার। এতে ক্ষুব্ধ মেলায় আগত দর্শনার্থীরা। ৩৬১ টি স্টলে প্রায় ৪ হাজার বিক্রয়কর্মী রয়েছে। সাথে আছে দিন কয়েক হাজার দর্শনার্থী। সবারই খেতে হয় মেলার হোটেল রেস্টুরেন্টে। সবারই অভিযোগ মেলায় খাবারে দাম বেশি কিন্তু মান কম।
নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী চিকেন বিরিয়ানির মূল্য ধরা হয়েছে ৩৯৫ টাকা, চিকেন চাপ ৪ ভাগের ১ ভাগ ২৮৫ টাকা, চিকেন মাসালা ৪ ভাগের ১ ভাগ ৩৩০ টাকা, এক প্লেট চিকেন ফ্রাই ৭৫০ টাকা, এক পিস পরোটার দাম ৫৫ টাকা, এক প্লেট চিকেন সবজির দাম ৫৫০ টাকা ধরা হয়েছে। এসব খাবার বাইরে অর্ধেকের চেয়েও কম দামে মিলছে। তার ওপর খাবারের মান নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ পুরান ঢাকার শামিম মিয়া বলেন, হাজির বিরিয়ানি নামে যা বিক্রি হচ্ছে, তাতে সেই স্বাদ গন্ধ নেই। তিনি আরো বলেন, মেলায় সব কিছুরই দাম বেশি।
মেলার ঘুরে জানা যায়, ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবারের চেয়ে একেবারে কম ছিল দর্শনার্থী ও ক্রেতার সংখ্যা। তবে মেলার আগত শিশুদের জন্য করা শিশুপার্কে অভিভাবক ও শিশুদের সমাগম ছিল। এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট থাকার কারণে দর্শনার্থী কম হচ্ছে বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। মেলা ও মেলার আশপাশের এলাকায় ধুলাবালি আচ্ছন্ন হওয়ায় পরিবেশও হুমকির মুখে।
রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া এলাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন জাহিদ মিয়া তিনি বলেন, মেলায় এসে শিশুদের জন্য করা শিশুপার্ক দেখে ভালোই লাগলো। শিশুরাও আনন্দ করেছে বেশ। তবে মেলায় দুপুর হয়ে যাওয়ায় খাবার খেতে হয়েছে পরিবার নিয়ে। নিম্নমানের খাবারে চড়া দাম দিয়ে খাবার খেয়ে খুব খারাপ লাগলো। এসব বিষয়ে তদারকি করার জন্য ভোক্তা অধিকারের নজর দেওয়া উচিৎ। না হয় মেলায় আসার ইচ্ছে কমে যাবে অনেকের।
জহির উদ্দিন নামে আরেকজন দর্শনার্থী বলেন, আজকে মেলায় এসেছি মেলার পরিবেশ ও কি কি উঠেছে তা দেখার জন্য। শেষের দিকে আবার আসতে হবে কেনাকাটা করার জন্য। কারণ তখন প্রতিটি স্টলের মালামাল বিক্রি করা হয় বিশেষ ছাড়ে। সড়কে যানজট ছাড়া সব কিছুই উপভোগ করেছি কিন্তু মেলার খাবার রেস্তোরাঁ গুলোতে যে চড়া দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এতে হতাশ হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই আমাদের। ওখানে মেলা কর্তৃপক্ষ দেখলাম ভোক্তা সেবার জন্য একটি স্টল করেছে ভোক্তা অধিকারের। তারা যদি ঠিক মতো খাবার রেস্তোরাঁ গুলোতে খেয়াল না করেন তবে মেলায় আগত দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের সংখ্যা কমতে থাকবে।
খাবারের দোকানিরা বলছেন, মানে কোনো সমস্যা নেই। তবে দামটা একটু বেশি। বাজারে সবকিছুরই দাম বেশি। আমরাও বেশি দামে কিনে নিতে হয়। তাছাড়াও মেলায় আমাদেরও স্টল নির্মাণসহ সব খরচই বেড়েছে। আমাদের কি করার আছে? বেশি দামে কিনে আমরা কিভাবে কম দামে বিক্রি করব?
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, সব দিকেই আমাদের নজর রয়েছে। কোন রেস্তোরাঁতে খাবারের চড়া দাম যাতে নিতে না পারে সে জন্য আমাদের মেলার প্যাভিলিয়নে ভোক্তা অধিকারের একটি টিম সবসময় নিয়োজিত রয়েছে। এমন অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।