মসজিদের সভাপতির পদ নিয়ে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ
স্বর্ণ ও ৫ লাখ টাকা লুটপাট
Tnntv24.নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মিঠাব জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে একাধিক বার সংঘর্ষ বাঁধে। সেই সংঘর্ষের জেরে স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুট করে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে জখম করে কাজী মনিরুজ্জামান মনির সমর্থিত শুক্কুর আলী মোল্লা গংদের বিরুদ্ধে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মিঠাবো মাছুমাবাদ এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার মিঠাবো এলাকায় অবস্থিত মিঠাবো জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে গত ৩ সপ্তাহ ধরে আগের কমিটির লোকজনকে জোর পূর্বক ভয়- ভীতি প্রয়োগ করে আসছিল ঐ এলাকার রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বিএনপি নেতা শুক্কুর আলী মোল্লা। জনশুতি আছে এই লোক কখনো আওয়ামী লীগ আবার কখনো জামায়াত ও বিএনপি। গত ১৫ বছর শুক্কুর আলী মোল্লা, তার ভাই শাহাদাত মোল্লা, তিন পুত্র সজল মোল্লা, সনেট মোল্লা, সানি মোল্লা,আলমগীর মোল্লা, ও কাউছার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো।
গত ৫ আগষ্টের পর ভোল পাল্টিয়ে বিএনপির কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের ব্লকে রাজনীতি শুরু করে। এ নিয়ে সমাজের লোকজনের মধ্যে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এদিকে গত শুক্রবার জুম্মার নামাযের পর নিজেকে সভাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন শুক্কুর আলী মোল্লা স্বয়ং নিজে । এনিয়ে শুক্কুর আলী ও তার লোকজনের সাথে সমাজের লোকজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়।
এ ঘটনায় শুক্কুর আলী ১০/১২ জনকে আসামী করে রূপগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের কোন সত্যতা না পাওয়ায় অভিযোগটি আমলে নেয়নি। পরে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেন শুক্কুর আলী। এদিকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার জুম্মার নামাযের পর শুক্কুর আলীকে মামলার কারন জানতে চাইলে সেসহ তারভাই শাহাদাত হোসেন মোল্লা, ছেলে সনেট মোল্লা, সজল মোল্লা, সানী মোল্লা ও ভাড়াটে সন্রাসীসহ তাদের লোকজনের সাথে সমাজের লোকজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।
এর জের ধরে বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে শুক্কুর আলীসহ তার লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র ছেন,চাপাটি,লোহাররড নিয়ে মিঠাবো এলাকার রুমানের বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাংচুর করে ১ভরি ওজনের গলারস্বর্নের চেইনসহ ৫ লাখ টাকা লুটপাট করে। বিষয়টি ভুলতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি অংকন ভুইয়া এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাকে এলোপাথারী কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় তাকে বাচাতে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা অংকনের চাচা ভুলতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মুরাদুল ইসলাম মুরাদ, রুমান ও সৈকতকে আহত করে। গুরুতর আহত অংকনকে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়,সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পরে আজ শনিবার ভোরে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এব্যাপারে আহত ছাত্র দল নেতা মাতা মোসাঃ আাসমা ইসলাম বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামী করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে খবর পেয়ে পু্লিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। আহত অংকনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। কাজী মনিরুজ্জামান মনির সমর্থীত বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন বলেন,বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে শুক্কুর আলী মোল্লা সন্রাসী চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
এব্যাপারে শুক্কুর আলী মোল্লার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য ২০০১ সালে শুক্কুর আলী মোল্লা পাশের বাড়ির হাছিনা বেগম নামে এক মহিলাকে ধর্ষন করার সময় তার পুরুষাং কেটে ফেলে। ঐ সময় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, মসজিদের সভাপতির পদ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।